মঙ্গলবার, ২৪ এপ্রিল, ২০১৮

কণিকা


পরিচয়

দয়া বলে, ‘কে গো তুমি, মুখে নাহি কথা।’
অশ্রুভরা আঁখি বলে, ‘আমি কৃতজ্ঞতা।’


ক্ষুদ্রের দম্ভ

শৈবাল দিঘিরে বলে উচ্চ করি শির,
‘লিখে রেখো, এক ফোঁটা দিলেম শিশির।’




 নম্রতা

কহিল কঞ্চির বেড়া, ওগো পিতামহ
বাঁশবন, নুয়ে কেন পড় অহরহ?
আমরা তোমারি বংশে ছোটো ছোটো ডাল,
তবু মাথা উঁচু করে থাকি চিরকাল।
বাঁশ কহে, ভেদ তাই ছোটোতে বড়োতে,
নত হই, ছোটো নাহি হই কোনোমতে।


ভিক্ষা ও উপার্জন
বসুমতি, কেন তুমি এতই কৃপণা,
কত খোঁড়াখুঁড়ি করি পাই শস্যকণা।
দিতে যদি হয় দে মা, প্রসন্ন সহাস—
কেন এ মাথার ঘাম পায়েতে বহাস।
বিনা চাষে শস্য দিলে কী তাহাতে ক্ষতি?
শুনিয়া ঈষৎ হাসি কন বসুমতী,
আমার গৌরব তাহে সামান্যই বাড়ে,
তোমার গৌরব তাহে নিতান্তই ছাড়ে।


উচ্চের প্রয়োজন
কহিল মনের খেদে মাঠ সমতল,
হাট ভ’রে দিই আমি কত শস্য ফল।
পর্বত দাঁড়ায়ে রন কী জানি কী কাজ,
পাষাণের সিংহাসনে তিনি মহারাজ।
বিধাতার অবিচার, কেন উঁচুনিচু
সে কথা বুঝিতে আমি নাহি পারি কিছু।
গিরি কহে, সব হলে সমভূমি-পারা
নামিত কি ঝরনার সুমঙ্গলধারা? 

পরের কর্মবিচার

নাক বলে, ‘কান কভু ঘ্রাণ নাহি করে,
রয়েছে কুণ্ডল দুটো পরিবার তরে।’
কান বলে, ‘কারো কথা নাহি শুনে নাক,
ঘুমোবার বেলা শুধু ছাড়ে হাঁকডাক।’

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন