মঙ্গলবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

একটু খানি



আবুল হোসেন মিয়া

একটু খানি স্নেহের কথা একটু ভালবাসা,
গড়তে পরে এ দুনিয়ায় শান্তি সুখের বাসা।
একটু খানি অনাদর আর একটু অবহেলা,
গুছিয়ে দিতে পারে মোদের সকল লীলা খেলা।
একটু খানি ভুলের তরে অনেক বিপদ ঘটে,
ভুল করেছেন যারা সবাই ভুক্তভোগী বটে।
একটু খানি বিষের ছোঁয়া মরণ ডেকে আনে,
এই দুনিয়ার ভুক্তভোগী সকল মানুষ জানে।
একটু খানি ছোট্ট শিশুর একটু মুখের হাসি,
মায়ের প্রানে সবার কানে বাজায় সুখের বাঁশি।

রবিবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো



আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী
আমি কি ভুলিতে পারি।।
ছেলেহারা শত মায়ের অশ্রু গড়ায়ে ফেব্রুয়ারী
আমি কি ভুলিতে পারি।।

আমার সোনার দেশের রক্তে জাগালো ফেব্রুয়ারী
আমি কি ভুলিতে পারি।।
আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী
আমি কি ভুলিতে পারি।।

মঙ্গলবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

অকর্মার বিভ্রাট

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

------------------
লাঙল কাঁদিয়া বলে ছাড়ি দিয়ে গলা,
তুই কোথা হতে এলি ওরে ভাই ফলা?
যেদিন আমার সাথে তোরে দিল জুড়ি
সেই দিন হতে মোর মাথা-খোঁড়াখুঁড়ি।
ফলা কহে, ভালো ভাই, আমি যাই খসে,
দেখি তুমি কী আরামে থাক ঘরে ব’সে।
ফলাখানা টুটে গেল, হল্‌খানা তাই
খুশি হয়ে পড়ে থাকে, কোনো কর্ম নাই।
চাষা বলে, এ আপদ আর কেন রাখা,
এরে আজ চালা করে ধরাইব আখা।
হল্‌ বলে, ওরে ফলা, আয় ভাই ধেয়ে—
খাটুনি যে ভালো ছিল জ্বলুনির চেয়ে।

শনিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

প্রাণ


রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর


মরিতে চাহি না আমি সুন্দর ভুবনে ,
মানবের মাঝে আমি বাঁচিবারে চাই ।
এই সূর্যকরে এই পুষ্পিত কাননে
জীবন্ত হৃদয় – মাঝে যদি স্থান পাই ।
ধরায় প্রাণের খেলা চিরতরঙ্গিত ,
বিরহ মিলন কত হাসি – অশ্রু – ময় ,
মানবের সুখে দুঃখে গাঁথিয়া সংগীত
যদি গো রচিতে পারি অমর – আলয় ।
তা যদি না পারি তবে বাঁচি যত কাল
তোমাদেরি মাঝখানে লভি যেন ঠাঁই ,
তোমরা তুলিবে বলে সকাল বিকাল
নব নব সংগীতের কুসুম ফুটাই ।
হাসিমুখে নিয়ো ফুল , তার পরে হায়
ফেলে দিয়ো ফুল , যদি সে ফুল শুকায় ।

কাজ

আখতার হুসেন 

মা ও বলেন , বাবাও বলেন
অভিযোগের সুরে
আমি নাকি আলসে এবং কুড়ে।
ঘরের কোনো কাজ করি না মিনু যেমন করে
সারাটা দিন ধরে।

তাইতো মিনু সবার কাছে লক্ষ্মী সোনা মেয়ে
বায়না যখন যা ধরে তাই তখ্খুনি যায় পেয়ে।

মিনুর কী কাজ ? কখনো বা মসলা পাতি বাটে
মা’র হয়ে বাসন-থালা যায় যে নিয়ে ঘাটে।
কলসি ভরে জল আনে আর
কাঁথায় নক্সা বোনে
কখনো বা ঝাড় দিয়ে যায়
দাওয়ায় , ঘরের কোণে।

আর আমি ? কাজ করি যে কতো সারাটা দিন ধরে
সে সব কথা একবারও কেউ , কেউ বলে না ঘরে।
কালবোশেখীর ঝড়
ভাঙলে পরে গাছের ডানা , পাখির বাসা-ঘর
আমি যে যাই ছুটে
খড়-কুটো সব খুঁজি গিয়ে মাঠপারে , প্রান্তরে
ওদের বাসা দেই বানিয়ে সযত্নে তারপরে।

এগুলো নয় কাজ ?
মা-বাবাকে বলবো গিয়ে আজ।
কাকলীদের খুড়ো
বড্ডো যে থুত্থুরো
শ্বাস নেন খুব ঘন ঘন পথ চলতে গেলে
থমকে দাঁড়ান চৌ-মাথাটার সাঁকোর ধারে এলে।

তখন ছুটে কেউ তো আসে নাকো
আমিই ছুটি আমিই তাঁকে পার করিয়ে
দেই যে বাঁশের সাঁকো।

এগুলো নয় কাজ ?
মা-বাবাকে বলবো গিয়ে আজ।
আকাশ-ভাঙা ঝমঝমানো ভর বর্ষা শেষে
দূর-বিদেশের রং বে-রঙের পাখিরা সব এসে-
শালুক বিলে বসায় যখন মেলা
মনের সুখে গান গায় আর কেবল খেলে খেলা ;
শুনতে পেয়ে তাদের সে গান , হরেক রকম ডাক
ছুটে আসে শালুক বিলে শিকারীদের ঝাঁক-
তখন আমি ঢিলের পরে ঢিলটা ওদের ছুঁড়ে
শিকারীদের নাগাল থেকে দেই পাঠিয়ে দূরে।

এগুলো নয় কাজ ?
মা-বাবাকে বলবো গিয়ে আজ।

ষোল আনাই মিছে

– সুকুমার রায়

বিদ্যে বোঝাই বাবুমশাই চড়ি সখের বোটে,
মাঝিরে কন, বলতে পারিস সূর্যি কেন ওঠে?
চাঁদটা কেন বাড়ে কমে? জোয়ার কেন আসে?
বৃদ্ধ মাঝি অবাক হয়ে ফ্যালফ্যালিয়ে হাসে।
বাবু বলেন, সারা জীবন মরলিরে তুই খাটি,
জ্ঞান বিনা তোর জীবনটা যে চারি আনাই মাটি।
খানিক বাদে কহেন বাবু, ”বলতো দেখি ভেবে
নদীর ধারা কেমনে আসে পাহাড় থেকে নেবে?
বলতো কেন লবণ পোরা সাগর ভরা পানি?”
মাঝি সে কয়, ”আরে মশাই অত কি আর জানি?”
বাবু বলেন, ”এই বয়সে জানিসনেও তা কি
জীবনটা তোর নেহাৎ খেলো, অষ্ট আনাই ফাঁকি!”

আবার ভেবে কহেন বাবু, ” বলতো ওরে বুড়ো,
কেন এমন নীল দেখা যায় আকাশের ঐ চুড়ো?
বলতো দেখি সূর্য চাঁদে গ্রহণ লাগে কেন?”
বৃদ্ধ বলে, ”আমায় কেন লজ্জা দেছেন হেন?”
বাবু বলেন, ”বলব কি আর বলব তোরে কি তা,-
দেখছি এখন জীবনটা তোর বারো আনাই বৃথা।”

খানিক বাদে ঝড় উঠেছে, ঢেউ উঠেছে ফুলে,
বাবু দেখেন, নৌকাখানি ডুবলো বুঝি দুলে!

মাঝিরে কন, ” একি আপদ! ওরে ও ভাই মাঝি,
ডুবলো নাকি নৌকা এবার? মরব নাকি আজি?”
মাঝি শুধায়, ”সাঁতার জানো?”- মাথা নাড়েন বাবু,
মূর্খ মাঝি বলে, ”মশাই, এখন কেন কাবু?
বাঁচলে শেষে আমার কথা হিসেব করো পিছে,
তোমার দেখি জীবন খানা ষোল আনাই মিছে!”

sholo anai miche

বসন্ত এসে গেছে


শিল্পীঃ লগ্নজিতা চক্রবর্তী
 ছায়াছবিঃ চতুষ্কোণ
সুরকারঃ অনুপম রায়
গীতিকারঃ অনুপম রায়


আকাশে বহিছে প্রেম, নয়নে লাগিল নেশা
কারা যে ডাকিল পিছে! বসন্ত এসে গেছে
মধুর অমৃত বাণী, বেলা গেল সহজেই
মরমে উঠিল বাজি; বসন্ত এসে গেছে
থাক তব ভুবনের ধুলিমাখা চরণে
মথা নত করে রব, বসন্ত এসে গেছে
বসন্ত এসে গেছে।।

গগনের নবনীলে মনের গোপনে
বাজে ঐ, বাজে ঐ, বাজে ঐ
পলাশের নেশা মাখি চলেছি দু’জনে
বাসনার রঙে মিশি শ্যামলে স্বপনে
কুহু কুহু শোনা যায় কোকিলের কুহুতান
বসন্ত এসে গেছে, বসন্ত এসে গেছে

পূর্ণিমা রাতে ঐ ছোটছুটি করে কারা!
দখিনা পবনে দোলে, বসন্ত এসে গেছে
কেমনে গাঁথিব মালা, কেমনে বাজিব বেণু
আবেগে কাঁপিছে আঁখি, বসন্ত এসে গেছে
থাক তব ভূবনের ধুলিমাখা চরণে
মথা নত করে রব, বসন্ত এসে গেছে
বসন্ত এসে গেছে।।
বসন্ত এসে গেছে, বসন্ত এসে গেছে

এই বসন্তে অনেক জন্ম আগে
তোমায় প্রথম দেখেছিলেম আমি
হেঁটেছিলেম নিরুদ্দেশের পানে
সেই বসন্ত এখন ভীষণ দামী
আমার কাছে, তোমার কাছে, আমার কাছে
বসন্ত এসে গেছে।।

বৈজ্ঞানিক



মা গো আমায় দেখাসনে আর জুজু বুড়ির ভয়,
আজকাল আর আমি তোমার ছোট্ট খোকা নই।

কাজ কর্ম লিখা-পড়া খুব ফেলেছি শিখে,
এবার থেকে মনটা দেব আবিষ্কারের দিকে।

কাগজ দিয়ে উড়োজাহাজ বানাবি কত রোজ,
তুই মা শুধু রাঁধতে জানিস রাখিস কিসের খোঁজ?

রেলগাড়ি আর মোটরগাড়ি বানানো খুব সোজা,
লোহা-লক্কর ঐসব যদি এনে দাও এক বোঝা।

মাথা আমার মন্দ নয়, এবার দেখিস ঠিক, 

তোর ছেলে মা হয়ে যাবে বড় বৈজ্ঞানিক।

বুধবার, ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

সখী, ভাবনা কাহারে বলে



সখী, ভাবনা কাহারে বলে ।

সখী, যাতনা কাহারে বলে ।

তোমরা যে বলো দিবস-রজনী ‘ভালোবাসা’ ‘ভালোবাসা’—

সখী, ভালোবাসা কারে কয় !

সে কি কেবলই যাতনাময় ।

সে কি কেবলই চোখের জল ? সে কি কেবলই দুখের শ্বাস ?

লোকে তবে করে কী সুখেরই তরে এমন দুখের আশ ।

আমার চোখে তো সকলই শোভন,

সকলই নবীন, সকলই বিমল,

সুনীল আকাশ, শ্যামল কানন,

বিশদ জোছনা, কুসুম কোমল— সকলই আমার মতো ।

তারা কেবলই হাসে, কেবলই গায়,

হাসিয়া খেলিয়া মরিতে চায়—

না জানে বেদন, না জানে রোদন, না জানে সাধের যাতনা যত ।

ফুল সে হাসিতে হাসিতে ঝরে, জোছনা হাসিয়া মিলায়ে যায়,

হাসিতে হাসিতে আলোকসাগরে আকাশের তারা তেয়াগে কায় ।

আমার মতন সুখী কে আছে ।

আয় সখী, আয় আমার কাছে—

সুখী হৃদয়ের সুখের গান

শুনিয়া তোদের জুড়াবে প্রাণ ।

প্রতিদিন যদি কাঁদিবি কেবল একদিন নয় হাসিবি তোরা—

একদিন নয় বিষাদ ভুলিয়া সকলে মিলিয়া গাহিব মোরা ॥

sokhi vabna kahare bole




September On Jessore Road


Allen Ginsberg 

Millions of babies watching the skies
Bellies swollen, with big round eyes
On Jessore Road--long bamboo huts
Noplace to shit but sand channel ruts

Millions of fathers in rain
Millions of mothers in pain
Millions of brothers in woe
Millions of sisters nowhere to go

One Million aunts are dying for bread
One Million uncles lamenting the dead
Grandfather millions homeless and sad
Grandmother millions silently mad

Millions of daughters walk in the mud
Millions of children wash in the flood
A Million girls vomit & groan
Millions of families hopeless alone

Millions of souls nineteenseventyone
homeless on Jessore road under grey sun
A million are dead, the million who can
Walk toward Calcutta from East Pakistan

Taxi September along Jessore Road
Oxcart skeletons drag charcoal load
past watery fields thru rain flood ruts
Dung cakes on treetrunks, plastic-roof huts

Wet processions Families walk
Stunted boys big heads don't talk
Look bony skulls & silent round eyes
Starving black angels in human disguise

Mother squats weeping & points to her sons
Standing thin legged like elderly nuns
small bodied hands to their mouths in prayer
Five months small food since they settled there

on one floor mat with small empty pot
Father lifts up his hands at their lot
Tears come to their mother's eye
Pain makes mother Maya cry

Two children together in palmroof shade
Stare at me no word is said
Rice ration, lentils one time a week
Milk powder for warweary infants meek

No vegetable money or work for the man
Rice lasts four days eat while they can
Then children starve three days in a row
and vomit their next food unless they eat slow.

On Jessore road Mother wept at my knees
Bengali tongue cried mister Please
Identity card torn up on the floor
Husband still waits at the camp office door

Baby at play I was washing the flood
Now they won't give us any more food
The pieces are here in my celluloid purse
Innocent baby play our death curse

Two policemen surrounded by thousands of boys
Crowded waiting their daily bread joys
Carry big whistles & long bamboo sticks
to whack them in line They play hungry tricks

Breaking the line and jumping in front
Into the circle sneaks one skinny runt
Two brothers dance forward on the mud stage
Teh gaurds blow their whistles & chase them in rage

Why are these infants massed in this place
Laughing in play & pushing for space
Why do they wait here so cheerful & dread
Why this is the House where they give children bread

The man in the bread door Cries & comes out
Thousands of boys and girls Take up his shout
Is it joy? is it prayer? "No more bread today"
Thousands of Children at once scream "Hooray!"

Run home to tents where elders await
Messenger children with bread from the state
No bread more today! & and no place to squat
Painful baby, sick shit he has got.

Malnutrition skulls thousands for months
Dysentery drains bowels all at once
Nurse shows disease card Enterostrep
Suspension is wanting or else chlorostrep

Refugee camps in hospital shacks
Newborn lay naked on mother's thin laps
Monkeysized week old Rheumatic babe eye
Gastoenteritis Blood Poison thousands must die

September Jessore Road rickshaw
50,000 souls in one camp I saw
Rows of bamboo huts in the flood
Open drains, & wet families waiting for food

Border trucks flooded, food cant get past,
American Angel machine please come fast!
Where is Ambassador Bunker today?
Are his Helios machinegunning children at play?

Where are the helicopters of U.S. AID?
Smuggling dope in Bangkok's green shade.
Where is America's Air Force of Light?
Bombing North Laos all day and all night?

Where are the President's Armies of Gold?
Billionaire Navies merciful Bold?
Bringing us medicine food and relief?
Napalming North Viet Nam and causing more grief?

Where are our tears? Who weeps for the pain?
Where can these families go in the rain?
Jessore Road's children close their big eyes
Where will we sleep when Our Father dies?

Whom shall we pray to for rice and for care?
Who can bring bread to this shit flood foul'd lair?
Millions of children alone in the rain!
Millions of children weeping in pain!

Ring O ye tongues of the world for their woe
Ring out ye voices for Love we don't know
Ring out ye bells of electrical pain
Ring in the conscious of America brain

How many children are we who are lost
Whose are these daughters we see turn to ghost?
What are our souls that we have lost care?
Ring out ye musics and weep if you dare--

Cries in the mud by the thatch'd house sand drain
Sleeps in huge pipes in the wet shit-field rain
waits by the pump well, Woe to the world!
whose children still starve in their mother's arms curled.

Is this what I did to myself in the past?
What shall I do Sunil Poet I asked?
Move on and leave them without any coins?
What should I care for the love of my loins?

What should we care for our cities and cars?
What shall we buy with our Food Stamps on Mars?
How many millions sit down in New York
& sup this night's table on bone & roast pork?

How many millions of beer cans are tossed
in Oceans of Mother? How much does She cost?
Cigar gasolines and asphalt car dreams
Stinking the world and dimming star beams--

Finish the war in your breast with a sigh
Come tast the tears in your own Human eye
Pity us millions of phantoms you see
Starved in Samsara on planet TV

How many millions of children die more
before our Good Mothers perceive the Great Lord?
How many good fathers pay tax to rebuild
Armed forces that boast the children they've killed?

How many souls walk through Maya in pain
How many babes in illusory pain?
How many families hollow eyed lost?
How many grandmothers turning to ghost?

How many loves who never get bread?
How many Aunts with holes in their head?
How many sisters skulls on the ground?
How many grandfathers make no more sound?

How many fathers in woe
How many sons nowhere to go?
How many daughters nothing to eat?
How many uncles with swollen sick feet?

Millions of babies in pain
Millions of mothers in rain
Millions of brothers in woe
Millions of children nowhere to go


মঙ্গলবার, ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

যশোর রোড

- মৌসুমী ভৌমিক
-------------------
শত শত চোখ আকাশটা দেখে
শত শত শত মানুষের দল
যশোর রোডের দু-ধারে বসত
বাঁশের ছাউনি, কাদামাটি জল।
কাদামাটি মাখা মানুষের দল
গাদাগাদি হয়ে আকাশটা দেখে
আকাশে বসত মরা ঈশ্বর
নালিশ জানাবে ওরা বল কাকে?
ঘরহীন ওরা ঘুম নেই চোখে
যুদ্ধে ছিন্ন ঘর-বাড়ী-দেশ
মাথার ভিতর বোমারু বিমান
এই কালো রাত কবে হবে শেষ।
শত শত মুখ হায় একাত্তুর
যশোর রোড যে কত কথা বলে
এত মরা মুখ আধ মরা পায়ে
পূর্ব বাংলা কোলকাতা চলে ।

সময় চলেছে রাজপথ ধরে
যশোর রোডেতে মানুষ মিছিল
সেপ্টেম্বর হায় একাত্তুর
গরুগাড়ি কাদা রাস্তা পিছিল।
লক্ষ মানুষ ভাত চেয়ে মরে
লক্ষ মানুষ শোকে ভেসে যায়
ঘরহীন ভাসে শত শত লোক
লক্ষ জননী পাগলের প্রায়।
রিফিউজি ঘরে খিদে পাওয়া শিশু
পেটগুলো সব ফুলে ফেঁপে ওঠে
এইটুকু শিশু, এতবড় চোখ
দিশেহারা মা কার কাছে ছোটে।
সেপ্টেম্বর হায় একাত্তর
এতো এতো শুধু মানুষের মুখ
যুদ্ধ, মৃত্যু
তবুও স্বপ্ন
ফসলের মাঠে ফেলে আসা সুখ।

কার কাছে বলি ভাত রুটি কথা
কাকে বলি কর কর কর ত্রাণ
কাকে বলি ওগো মৃত্যু থামাও
মরে যাওয়া বুকে এনে দাও প্রাণ।
কাঁদো কাঁদো তুমি মানুষের দল
তোমার শরীর ক্ষত দিয়ে ঢাকা
জননীর কোলে আধপেটা শিশু
এ কেমন বাঁচা, বেঁচে মরে থাকা।
ছোট ছোট তুমি মানুষের দল
তোমার ঘরেও মৃত্যুর ছায়া
গুলিতে ছিন্ন দেহ-মন-মাটি
ঘর ছেড়েছো তো মাটি মিছে মায়া।
সেপ্টেম্বর হায় একাত্তর
ঘর ভেঙ্গে গেছে যুদ্ধের ঝড়ে
যশোর রোডের দু'ধারে মানুষ
এত এত লোক শুধু কেন মরে

শত শত চোখ আকাশটা দেখে
শত শত শত শিশু মরে গেল
যশোর রোডের যুদ্ধক্ষেত্রে
ছেঁড়া সংসার সব এলোমেলো
কাদামাটি মাখা মানুষের দল
গাদাগাদি হয়ে আকাশটা দেখে
আকাশে বসত মরা ঈশ্বর
নালিশ জানাবে ওরা বল কাকে?
ঘরহীন ওরা ঘুম নেই চোখে
যুদ্ধে ছিন্ন ঘর-বাড়ী-দেশ
মাথার ভিতর বোমারু বিমান
এই কালো রাত কবে হবে শেষ।
শত শত মুখ হায় একাত্তুর
যশোর রোড যে কত কথা বলে
এত মরা মুখ আধ মরা পায়ে
পূর্ব বাংলা কোলকাতা চলে ।।

অ্যালেন গিন্সবার্গের ‘September on Jessore Road’ অবলম্বনে মৌসুমী ভৌমিক গেয়েছেন ‘যশোর রোড’

রবিবার, ৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

বাড়ির কাছে আরশী নগর


বাড়ির কাছে আরশী নগর
(একঘর) সেথা পড়শী বসত করে-
আমি একদিনও না দেখিলাম তারে।।
গেরাম বেড়ে অগাধ পানি
নাই কিনারা নাই তরণী পারে,
বাঞ্ছা করি দেখব তারে
(আমি) কেমনে সেথা যাই রে।।
কি বলব পড়শীর কথা,
হস্ত পদ স্কন্ধ মাথা নাই-রে
ক্ষণেক থাকে শূণ্যের উপর
(ওসে) ক্ষণেক ভাসে নীরে।।
পড়শী যদি আমায় ছুঁতো,
যম যাতনা সকল যেতো দূরে।
সে আর লালন একখানে রয়-
(তবু) লক্ষ যোজন ফাঁক রে।।

জাত গেল জাত গেল



জাত গেল জাত গেল বলে
একি আজব কারখানা
সত্য কাজে কেউ নয় রাজি
সবি দেখি তা না-না-না।।
আসবার কালে কি জাত ছিলে
এসে তুমি কি জাত নিলে,
কি জাত হবা যাবার কালে
সে কথা ভেবে বল না।।
ব্রাহ্মণ চন্ডাল চামার মুচি
এক জলেই সব হয় গো শুচি,
দেখে শুনে হয় না রুচি
যমে তো কাকেও ছাড়বে না।।
গোপনে যে বেশ্যার ভাত খায়,
তাতে ধর্মের কি ক্ষতি হয়।
লালন বলে জাত কারে কয়
এ ভ্রম তো গেল না।।

ও যার আপন খবর


ও যার আপন খবর আপনার হয় না,
একবার আপনারে চিনতে পারলে রে
যাবে অচেনারে চেনা।।
ও সাঁই নিকট থেকে দূরে দেখায়
যেমন কেশের আড়ে পাহাড় লুকায় দেখ না।
আমি ঘুরে এলাম সারা জগত রে
তবু মনের গোল তো যায় না।।
ও সে আমৃত সাগরের সুধা-
সুধা খাইলে জীবের ক্ষুধা-তৃষ্ণা রয় না।
ফকির লালন মরল জল-পিপাসায় রে
কাছে থাকতে নদী মেঘনা।।

এ মন কেন মানেনা



এ মন কেন
মানেনা মানেনা মানেনা
নিঝুম আঁধার
কাটেনা কাটেনা কাটেনা
প্রতীক্ষায় জীবন আমার
কেঁদে কেঁদে ক্ষয়ে ক্ষয়ে যায়
হায় জ্বালা জ্বালা জ্বালা
এ মন জুড়ে
হায় জ্বালা জ্বালা জ্বালা
এ অন্তরে
এতো নিষ্ঠুর কেন হলে

শূন্য বুকে এই মনে
ফিরে আসলো আবার
সোনালী স্বপ্নগুলো
কেন কাছে এসে আবার
হারিয়ে যায়
হায় জ্বালা জ্বালা জ্বালা
এ মন জুড়ে
হায় জ্বালা জ্বালা জ্বালা
এ অন্তরে
এতো নিষ্ঠুর কেন হলে

সারাক্ষণ ভাবি তোমাকে
কত যে আশায়
রূপালী কোনো মাঝরাতে
প্রেমেরই কবিতা কোথায়
হারিয়ে যায়
হায় জ্বালা জ্বালা জ্বালা
এ মন জুড়ে
হায় জ্বালা জ্বালা জ্বালা
এ অন্তরে
এতো নিষ্ঠুর কেন হলে

খুঁজে বেড়াও যারে তারে পাবে না রে



খুঁজে বেড়াও যারে তারে পাবে না রে
সে স্বপ্নটা ঝরে যাবে
সে স্বপ্নটা ঝরে যাবে
বাসাটা ভেঙে যাবে
এ খেলা খেলোনা না না
এ খেলা খেলোনা
ভালোবাসো যারে
তারে পাবে না রে
ঘুমে দু’চোখ ছুঁয়ে
যে যাবার চলে যাবে
মিছে মিছে ভালোবেসোনা

চলে গেলে তুমি বলে যেও না
ঠিকানাও লিখে রেখোনা
ঐ ভালোবাসার দেশে
কেউ ফেরেনা হেসে হেসে
কথাগুলো শুধু কথা হয়
শুধুই যে কথা
ভালোবাসো যারে
তারে পাবে না রে
ঘুমে দু’চোখ ছুঁয়ে
যে যাবার চলে যাবে
মিছে মিছে ভালোবেসোনা

অনন্ত অসীম (এটি সূরা ফাতিহা এর বঙ্গানুবাদ)


অনুবাদঃ গোলাম মোস্তফা

অনন্ত অসীম প্রেমময় তুমি, বিচার দিনের স্বামী।
অনন্ত অসীম প্রেমময় তুমি, বিচার দিনের স্বামী।
যত গুণগান হে চির মহান, তোমারি অন্তর্যামী।
অনন্ত অসীম প্রেমময় তুমি, বিচার দিনের স্বামী।

দ্যুলোক-ভূলোক সবারে ছাড়িয়া তোমারই চরণে পড়ি লুটাইয়া
তোমারই সকাশে যাচি হে শকতি তোমারই করুণাকামী।

অনন্ত অসীম প্রেমময় তুমি, বিচার দিনের স্বামী।
যত গুণগান হে চির মহান, তোমারি অন্তর্যামী।
অনন্ত অসীম প্রেমময় তুমি, বিচার দিনের স্বামী।

সরল সঠিক পূণ্য পন্থা মোদের দাও গো বলি,
চালাও সে পথে, যে পথে তোমার প্রিয়জন গেছে চলি।

অনন্ত অসীম প্রেমময় তুমি, বিচার দিনের স্বামী।
যত গুণগান হে চির মহান, তোমারি অন্তর্যামী।
অনন্ত অসীম প্রেমময় তুমি, বিচার দিনের স্বামী।

যে-পথে তোমার চির-অভিশাপ
যে-পথে ভ্রান্তি, চির-পরিতাপ
হে মহাচালক,মোদের কখনও
করো না সে পথগামী।

অনন্ত অসীম প্রেমময় তুমি, বিচার দিনের স্বামী।
অনন্ত অসীম প্রেমময় তুমি, বিচার দিনের স্বামী।
যত গুণগান হে চির মহান, তোমারি অন্তর্যামী।
অনন্ত অসীম প্রেমময় তুমি, বিচার দিনের স্বামী।

মঙ্গলবার, ২ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

শিক্ষকের মর্যাদা


 - কাজী কাদের নেওয়াজ

 বাদশাহ আলমগীর-
কুমারে তাঁহার পড়াইত এক মৌলভী দিল্লীর।
একদা প্রভাতে গিয়া
দেখেন বাদশাহ- শাহজাদা এক পাত্র হস্তে নিয়া
ঢালিতেছে বারি গুরুর চরণে
পুলকিত হৃদে আনত-নয়নে,
শিক্ষক শুধু নিজ হাত দিয়া নিজেরি পায়ের ধুলি
ধুয়ে মুছে সব করিছেন সাফ্ সঞ্চারি অঙ্গুলি।
শিক্ষক মৌলভী
ভাবিলেন আজি নিস্তার নাহি, যায় বুঝি তার সবি।
দিল্লীপতির পুত্রের করে
লইয়াছে পানি চরণের পরে,
স্পর্ধার কাজ হেন অপরাধ কে করেছে কোন্ কালে!
ভাবিতে ভাবিতে চিন্তার রেখা দেখা দিল তার ভালে।
হঠাৎ কি ভাবি উঠি
কহিলেন, আমি ভয় করি না’ক, যায় যাবে শির টুটি,
শিক্ষক আমি শ্রেষ্ঠ সবার
দিল্লীর পতি সে তো কোন্ ছার,
ভয় করি না’ক, ধারি না’ক ধার, মনে আছে মোর বল,
বাদশাহ্ শুধালে শাস্ত্রের কথা শুনাব অনর্গল।
যায় যাবে প্রাণ তাহে,
প্রাণের চেয়েও মান বড়, আমি বোঝাব শাহানশাহে।

তার পরদিন প্রাতে
বাদশাহর দূত শিক্ষকে ডেকে নিয়ে গেল কেল্লাতে।
খাস কামরাতে যবে
শিক্ষকে ডাকি বাদশা কহেন, ”শুনুন জনাব তবে,
পুত্র আমার আপনার কাছে সৌজন্য কি কিছু শিখিয়াছে?
বরং শিখেছে বেয়াদবি আর গুরুজনে অবহেলা,
নহিলে সেদিন দেখিলাম যাহা স্বয়ং সকাল বেলা”
শিক্ষক কন-”জাহপানা, আমি বুঝিতে পারিনি হায়,
কি কথা বলিতে আজিকে আমায় ডেকেছেন নিরালায়?”
বাদশাহ্ কহেন, ”সেদিন প্রভাতে দেখিলাম আমি দাঁড়ায়ে তফাতে
নিজ হাতে যবে চরণ আপনি করেন প্রক্ষালন,
পুত্র আমার জল ঢালি শুধু ভিজাইছে ও চরণ।
নিজ হাতখানি আপনার পায়ে বুলাইয়া সযতনে
ধুয়ে দিল না’ক কেন সে চরণ, স্মরি ব্যথা পাই মনে।”

উচ্ছ্বাস ভরে শিক্ষকে আজি দাঁড়ায়ে সগৌরবে
কুর্ণিশ করি বাদশাহে তবে কহেন উচ্চরবে-
”আজ হতে চির-উন্নত হল শিক্ষাগুরুর শির,
সত্যই তুমি মহান উদার বাদশাহ্ আলমগীর।”

সোমবার, ১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

আমি তো্মার মনের ভেতর

হাবিব ও ন্যান্সি

আমি তো্মার মনের ভেতর একবার
ঘুরে আসতে চাই
আমায় কতটা ভালবাসো সে কথাটা
জানতে চাই
ভালবাসার যত কথা, হৃদয় দিয়ে
শুনতে চাই
তুমি সুধু আমার হবে পৃথিবিকে
বলতে চাই

এ হৃদয়ে জলছে এক যাতন
মোমবাতি
তুমি আগুন হয়ে পুড়ছো আমায় সারা
দিবা রাতি

এ হৃদয়ে জলছে এক যাতন
মোমবাতি
তুমি আগুন হয়ে পুড়ছো আমায় সারা
দিবা রাতি
এ হৃদয়ে ফুটছে ফুল প্রেমের ফানস
তুমি ফাগুন হয়ে রঙ ছোয়ালে
মনেরো নীলাকাশ
আমি তো্মার মনের ভেতর একবার
ঘুরে আসতে চাই
আমায় কতটা ভালবাসো সে কথাটা
জানতে চাই

এ প্রনয়ে অন্ধ হলাম প্রানের আলো তুমি
দুঃখ এলে ভুলে যেওনা বাচবনাতো আমি
এ প্রনয়ে অন্ধ হলাম প্রানের আলো
তুমি
দুঃখ এলে ভুলে যেওনা বাচবনাতো
আমি

এ প্রনয়ে কথা দিলাম সূয্য চন্দ্র তারা
সাক্ষী থেকো মরন যেনো হয়না তো্মায় ছাড়া
আমি তো্মার
মনের ভেতর
একবার
ঘুরে আসতে চাই
আমায় কতটা
ভালবাসো সে
কথাটা
জানতে চাই

ভালবাসার যত কথা, হৃদয় দিয়ে
শুনতে চাই
তুমি সুধু আমার হবে পৃথিবিকে
বলতে চাই

click to hear this song

ami tomar moner vitor by Habib & Nancy

তো্মারে দেখিল

হাবিব ও ন্যানসি --


তো্মারে দেখিল পরানো ভরিয়া
আসমান জমিন দরিয়া

তো্মারে দেখিল পরানো
ভরিয়া
আসমান জমিন দরিয়া
চলিতে চলিতে থামিয়া
দেখিব তো্মারে আমিও

ও রুপে দিলা তুমি
পাগল করিয়া
ও কাজল টানা আখিতে
ডাগর আখিতে
নজর-ও পড়িলে কি
হবে ?

ও প্রেমেতে পড়িলে
মরনে মরিবে
দেখিও তুমি তবু নিরবে

চোখের পলকে - পলকে
রুপের ঝলকে- ঝলকে

আমি যে ডুবে রই
সেই প্রেমে পড়িয়া
ও রুপে দিলা তুমি পাগল
করিয়া

ও মায়া হাসিরে , কি
ভালবাসিরে
এমনো করিয়া হাসিও

ও নিকটে থাকিও
দেখিয়া রাখিও
এভাবে তুমি ভালবাসিও

যাবেরে যে পথে
যাবেরে
পাবেরে দেখিতে পাবেরে
তো্মারে দেখে সব
ফুল গেছে ঝরিয়া

হৃদয়ের কথা

হাবিব ও ন্যান্সি


ও তোমাকে ছেড়ে আমি কি নিয়ে থাকব, ভালোবেসে যাব ওগো যত দিন বাচব
হেসোনা হেসোনা তুমি জেনো রেখো তা
বলেতো দিয়েছি আমি হৃদয়ের কথা
হৃদয়ের কথা

চাদেরও আলো দিয়ে মুখ খানি দেখব
পেয়নাক লজ্জা খুব কাছে রাখব

না না এভাবে বলোনাগো কোনো না বলা
লাজটুকু কেড়ে নিলে হবে যে মরণ

সইতে পারবনা হারানোর ব্যাথা
বলেতো দিয়েছি হৃদয়ের কথা

টিপ টিপ বৃষ্টিতে কি যে ভালো লাগছে
হৃদয়ের কথাগুলি শিস দিয়ে ডাকছে

এমন সুখ তুমি দিলেগো আমায়
কেড়ে নিতে পারবেনা মরণও তোমায়
শেষ করে দিয়ে আজ সব নিরবতা
বলেতো দিয়েছি আমি হৃদয়ের কথা

Ridoyer kotha by Habib & Nancy

দুরে কোথাও আছি

তৌসিফ

দুরে কোথাও আছি বসে, হাত দুটো দাও বাড়িয়ে
বিরহ ছুঁতে চায় মনের দুয়ার, দুচোখ নির্বাক আসনা ছুটে
তুমি এলে রংধনু রং ঢেলে দেয়, তুমি এলে মেঘেরা বৃষ্টি ঝরায়
এ মনের অহলাগ আসনা ছুটে ...


অনুরাগে ঝরে চাদ-ও আজ , এ লগনেও এলেনা
অনুভব নিশ্চুপ আজ, কথা যে বলেনা
ভালো যদি বাসো তুমি আমাকে
ছুটে চলে আসনা


দুরে কোথাও আছি বসে, হাত দুটো দাও বাড়িয়ে
বিরহ ছুঁতে চায় মনের দুয়ার, দুচোখ নির্বাক আসনা ছুটে

নীল আচল, নির্মল হাওয়া , এ লগনেও এলেনা
অচেতন থাকে মন, নিস্প্রান যত ভাবনা
দুরে কোথাও আছি বসে, হাত দুটো দাও বাড়িয়ে
বিরহ ছুঁতে চায় মনের দুয়ার, দুচোখ নির্বাক আসনা ছুটে
তুমি এলে রংধনু রং ঢেলে দেয়, তুমি এলে মেঘেরা বৃষ্টি ঝরায়
এ মনের অহলাগ আসনা ছুটে ...

dure kothao asi boshe by Tousif

আমার সোনা বন্ধুরে



আমার সোনা বন্ধুরে তুমি কোথায় রইলা রে

দিনে রাইতে তোমায় আমি খুইজা মরি রে


প্রথম দেখার কালে বন্ধু কথা দিয়েছিলে

ভুলিবে না মোরে এ জীবন গেলে

যদি না পাই তোমারে আমার জীবনের তরে

সোনার জীবন আঙ্গার হইবে

তোমার লাইগা রে


ভুলতে পার বন্ধু তুমি আমি ভুলি নাই

পর কালে যেন বন্ধু

মরন কালে যেন বন্ধু একবার তোমায় পাই

যদি না পাই সে কালে প্রেম যাইব বিফলে

তখন কিন্তু বলব আমি প্রেম কিছুই না রে

—————

মুজিব পরদেশী

amar sona bondhure tumi kothay roila re

বিয়া করলাম ক্যান



বিয়া করলাম ক্যান রে দাদা বিয়া করলাম ক্যান

হলাম আমার ঘরের আমি মেম্বার পরের মাইয়া চেয়ারম্যান।


তাড়াতাড়ি গেলে ক্যান

দেরি করে এলে ক্যান

মুখখানা কালি ক্যান

পকেটটা খালি ক্যান

বিয়েটা করলে ক্যান

সংসার গড়লে ক্যান

চিন্তাটা আগে করলে না ক্যান

এতো ক্যানোর জবাব দিতে আমার ফুরায় বুদ্ধি-জ্ঞান।

রে দাদা বিয়া করলাম ক্যনা।।


ঘরে চাল-ক্ষুদ নাই

বাচ্চার দুধ নাই

পান খেতে চুন নাই

একফোঁটা নুন নাই

আমার যে তেল নাই

পায়ে স্যাণ্ডেল নাই

তোমার কি কোনো আক্কেল নাই

বলো কতো আর সহ্য হয় কানে বউয়ের এই ঘ্যান ঘ্যান।

রে দাদা বিয়া করলাম ক্যনা।।


বেনারসী শাড়ি দাও

প্রাইভেট গাড়ি দাও

বারিধারায় বাড়ি দাও

আমেরিকায় পাড়ি দাও

টাকার পাহাড় দাও

চাইনিজ আহার দাও

সংসারে সুখের বাহার দাও

এমন হাজার বায়না শুনে আমি পড়ে হয়ে যাই অজ্ঞান।

রে দাদা বিয়া করলাম ক্যনা।।


————————

নকুল কুমার বিশ্বাস
অ্যালবাম: সাধের মাইয়া

আকাশের হাতে আছে

আকাশের হাতে আছে এক রাশ নীল,
বাতাসের আছে কিছু গন্ধ।
রাত্রির গায়ে জ্বলে জোনাকী
তটিনীর বুকে মৃদু ছন্দ।।
আমার এ দু’হাত শুধু রিক্ত,
আমার এ দু’চোখ জলে সিক্ত।
বুক ভরা নীরবতা নিয়ে অকারণ
আমার এ দুয়ার হলো বন্ধ।।
ভেবে তো পাইনি আমি
কি হলো আমার।
লজ্জা প্রহরে কেন,
খোলে নাকো দ্বার।
জানি না কেমন করে বলব,
খেয়ালে কতই ভেসে চলব।
বলি বলি করে তবু বলা হলো না।
জানি না কিসে এতো দ্বন্দ্ব।।

তুই কি আমার পুতুল পুতুল

মান্না দে

তুই কি আমার পুতুল পুতুল সেই ছোট্ট মেয়ে
যাকে নিয়ে স্বপ্ন আমার ঝড়ত দু’চোখ বেয়ে
নতুন নতুন করে তোকে যতই সাজাতাম
ভরত না মন দিতাম কত নতুন নতুন নাম।।

আজকে দেখি নতুন তোকে লাগছে সবার চেয়ে
তবু কেন জল আসেরে আমার দু’চোখ বেয়ে
কাজের থেকে ফিরতে আমার হয়ত হলে
না ঘুমিয়ে থাকতিস তুই জেগে মায়ের কোলে
কি খুশি যে হতিস রে তুই,কি খুশি যে হতিস রে তুই
আমার আসা দেখে ।
হাত দু’টোকে এগিয়ে দিতিস মায়েরই কোল থেকে
সেই দু’হাত গিয়েছে আজ মেহেদি রং ছেয়ে
তবু কেন জল আসেরে আমার দু’চোখ বেয়ে ?

দুষ্টুমি তোর স্কুলে যেতে, স্কুলের থেকে ফিরে
মাতিয়ে দিতিস সারাবাড়ী ছন্দ সুরের নীড়ে
আবার যখন সন্ধ্যা হতো যেতিস ঠাকুর ঘরে
সন্ধ্যা প্রদীপ জ্বেলে দিতিস শ্রোতকথা পড়ে
আজ মঙ্গল দ্বীপ জ্বলেছে তোর মঙ্গল চেয়ে
তবু কেন জল আসেরে আমার দু’চোখ বেয়ে ?

আর কোনদিন কাজের থেকে ফিরতে দেরী হলে
আর কখনো পারবি নারে জাগতে মায়ের কোলে
সকাল-সাজের দুষ্টুমি তোর আর যাবেনা দেখা
যা যা ছিল সবই রবে,,,শুধু রইব আমি একা—-

লজ্জা এলো লালচেলী আর সিথিঁর সিধুর বেয়ে
কে বলবে তুই আমাদের সেই ছোট্ট মেয়ে
কে বলবে তুই আমাদের পুতুল পুতুল মেয়ে।।

tui ki amar putul putul