মঙ্গলবার, ২২ ফেব্রুয়ারী, ২০২২

মেয়েদের পদবী

কবি- সুকান্ত ভট্টাচার্য

মেয়েদের পদবীতে গোলমাল ভারী,
অনেকের নামে তাই দেখি বাড়াবাড়ি ;
‘আ’কার অন্ত দিয়ে মহিলা করার
চেষ্টা হাসির। তাই ভূমিকা ছড়ার।
‘গুপ্ত’ ‘গুপ্তা’ হয় মেয়েদের নামে,
দেখেছি অনেক চিঠি পোস্টকার্ড, খামে।
সে নিয়মে যদি আজ ‘ঘোষ’ হয় ‘ঘোষা’,
তা হলে অনেক মেয়ে করবেই গোসা,
‘পালিত’ ‘পালিতা’ হলে ‘পাল’ হবে ‘পালা’
নির্ঘাৎ বাড়বেই মেয়েদের জ্বালা ;
‘মল্লিক’ ‘মল্লিকা’ , ‘দাস’ হলে ‘দাসা’
শোনাবে পদবীগুলো অতিশয় খাসা ;
‘কর’ যদি ‘করা’ হয় ‘ধর’ হয় ‘ধরা’,
মেয়েরা দেখবে এই পৃথিবীটা – “সরা”।
‘নাগ’ যদি ‘নাগা’ হয় ‘সেন’ হয় ‘সেনা’,
বড়োই কঠিন হবে মেয়েদের চেনা।।

সোমবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২২

শীত নয় গ্রীষ্ম এসেছে বসন্ত

 

          হাসান

শীত নয় গ্রীষ্ম নয় এসেছে বসন্ত
শীত নয় গ্রীষ্ম নয় এসেছে বসন্ত
আমার এ প্রেম তোমার প্রেম রবে যে অনন্ত
ফুলে ফুলে উড়ে প্রজাপতি উড়ে বেধেছে নতুন জুটি
তোমায় আমি ভালোবাসি অযুত লক্ষ নিযুত কোটি
তোমায় আমি ভালোবাসি অযুত লক্ষ নিযুত কোটি
শীত নয় গ্রীষ্ম নয় এসেছে বসন্ত
আমার এ প্রেম তোমার প্রেম রবে যে অনন্ত
ফুলে ফুলে উড়ে প্রজাপতি উড়ে বেধেছে নতুন জুটি
তোমায় আমি ভালোবাসি অযুত লক্ষ নিযুত কোটি
তোমায় আমি ভালোবাসি অযুত লক্ষ নিযুত কোটি
রোদ নয় বৃষ্টি নয় রাঙ্গাবো দিগন্ত
রোদ নয় বৃষ্টি নয় রাঙ্গাবো দিগন্ত
টংকা বাজিয়ে বাসর সাজিয়ে রবোনা ঘুমন্ত
ফুলে ফুলে উড়ে প্রজাপতি উড়ে বেধেছে নতুন জুটি
তোমায় আমি ভালোবাসি অযুত লক্ষ নিযুত কোটি
তোমায় আমি ভালোবাসি অযুত লক্ষ নিযুত কোটি
রোদ নয় বৃষ্টি নয় রাঙ্গাবো দিগন্ত
টংকা বাজিয়ে বাসর সাজিয়ে রবোনা ঘুমন্ত
ফুলে ফুলে উড়ে প্রজাপতি উড়ে বেধেছে নতুন জুটি
তোমায় আমি ভালোবাসি অযুত লক্ষ নিযুত কোটি
তোমায় আমি ভালোবাসি অযুত লক্ষ নিযুত কোটি
ছাই নয় দাস্য নয় হৃদয়টা জলন্ত
ছাই নয় দাস্য নয় হৃদয়টা জলন্ত
সুখের আগুনে পুড়বো দুজনে রবো যে জীবন্ত
ফুলে ফুলে উড়ে প্রজাপতি উড়ে বেধেছে নতুন জুটি
তোমায় আমি ভালোবাসি অযুত লক্ষ নিযুত কোটি
তোমায় আমি ভালোবাসি অযুত লক্ষ নিযুত কোটি
ছাই নয় দাস্য নয় হৃদয়টা জলন্ত
সুখের আগুনে পুড়বো দুজনে রবো যে জীবন্ত
ফুলে ফুলে উড়ে প্রজাপতি উড়ে বেধেছে নতুন জুটি
তোমায় আমি ভালোবাসি অযুত লক্ষ নিযুত কোটি
তোমায় আমি ভালোবাসি অযুত লক্ষ নিযুত কোটি

রবিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২২

গল্প বলা

 – সুকুমার রায়

‘এক যে রাজা’–’থাম্ না দাদা,
রাজা নয় সে, রাজ পেয়াদা৷’
‘তার যে মাতুল’–’মাতুল কি সে?—
সবাই জানে সে তার পিশে৷’
‘তার ছিল এক ছাগল ছানা’—
‘ছাগলের কি গজায় ডানা?’
‘একদিন তার ছাতের ‘পরে’—
‘ছাত কোথা হে টিনের ঘরে?’
‘বাগানের এক উড়ে মালী’—
‘মালী নয়তো! মেহের আলী৷’
‘মনের সাধে গাইছে বেহাগ’—
‘বেহাগ তো নয়! বসন্ত রাগ৷’

‘থও না বাপু ঘ্যাঁচা ঘেঁচি’—
‘আচ্ছা বল, চুপ করেছি৷’
‘এমন সময় বিছনা ছেড়ে,
হঠাৎ মামা আস্‌ল তেড়ে,
ধর্‌ল সে তার ঝুঁটির গোড়া’—
‘কোথায় ঝুঁটি? টাক যে ভরা৷’
‘হোক না টেকো তোর তাতে কি?
লক্ষীছাড়া মুখ্যু ঢেঁকি!
ধর্‌ব ঠেসে টুঁটির ‘পরে,
পিটব তোমার মুণ্ড ধ’রে—
কথার উপর কেবল কথা,
এখন বাপু পালাও কোথা?’

হাট্টিমাটিম

রোকনুজ্জামান খান

রোকনুজ্জামান খানের লেখা হাট্টিমাটিম টিম শিশুদের জন্য উপযোগী একটি বাংলা ছড়া। বাঙালি শিশুদের একদম ছোটবেলা থেকেই এই ছড়াটি শোনানো হয়ে থাকে। বেশিরভাগ সময়ই মানুষ মনে করে ছড়াটি চার লাইনের। প্রকৃতপক্ষে এটি দাদাভাই রচিত ৫২ লাইনের একটি ছড়া।


টাট্টুকে আজ আনতে দিলাম
বাজার থেকে শিম
মনের ভুলে আনল কিনে
মস্ত একটা ডিম।

বলল এটা ফ্রি পেয়েছে
নেয়নি কোনো দাম
ফুটলে বাঘের ছা বেরোবে
করবে ঘরের কাম।

সন্ধ্যা সকাল যখন দেখো
দিচ্ছে ডিমে তা
ডিম ফুটে আজ বের হয়েছে
লম্বা দুটো পা।

উল্টে দিয়ে পানির কলস
উল্টে দিয়ে হাঁড়ি
আজব দু`পা বেড়ায় ঘুরে
গাঁয়ের যত বাড়ি।

সপ্তা বাদে ডিমের থেকে
বের হলো দুই হাত
কুপি জ্বালায় দিনের শেষে
যখন নামে রাত।

উঠোন ঝাড়ে বাসন মাজে
করে ঘরের কাম
দেখলে সবাই রেগে মরে
বলে এবার থাম।

চোখ না থাকায় এ দুর্গতি
ডিমের কি দোষ ভাই
উঠোন ঝেড়ে ময়লা ধুলায়
ঘর করে বোঝাই।

বাসন মেজে সামলে রাখে
ময়লা ফেলার ভাঁড়ে
কাণ্ড দেখে টাট্টু বাড়ি
নিজের মাথায় মারে।

শিঙের দেখা মিলল ডিমে
মাস খানিকের মাঝে
কেমনতর ডিম তা নিয়ে
বসলো বিচার সাঁঝে।

গাঁয়ের মোড়ল পান চিবিয়ে
বলল বিচার শেষ
এই গাঁয়ে ডিম আর রবে না
তবেই হবে বেশ।

মনের দুখে ঘর ছেড়ে ডিম
চলল একা হেঁটে
গাছের সাথে ধাক্কা খেয়ে
ডিম গেলো হায় ফেটে।

গাঁয়ের মানুষ একসাথে সব;
সবাই ভয়ে হিম
ডিম ফেটে যা বের হলো তা
হাট্টিমাটিম টিম।

হাট্টিমাটিম টিম
তারা মাঠে পারে ডিম
তাদের খাড়া দুটো শিং
তারা হাট্টিমাটিম টিম।