শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৪

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা

ধীরেন্দ্রনাথ রায় চৌধুরী দরজা খুলে হাসিমুখে বললেন- কেমন আছ বাবা ?
(তিনি ধরেই নিলেন সামনে দাঁড়িয়ে থাকা যুবকটি তাঁর ছাত্র)
কলিমউল্লাহ বলল- স্যার ভালো আছি । আপনি কি আমাকে চিনতে পেরেছেন স্যার ?
(তিনি তাকে চিনতে পারেন নি । চিনতে পারার কথাও না)
তারপরও হাসিমুখে বললেন- চিনতে পারবনা কেন? চিনেছি ।
(মিথ্যা বলার কারণ হলো তিনি অতীত অভিজ্ঞতায় দেখেছেন, যতবার কোনো ছাত্রকে দেখে তিনি না চেনার কথা বলেছেন, ততবারই তারা ভয়ঙ্কর মনে কষ্ট পেয়েছে । এক ছাত্র তো কেঁদেই ফেলেছিল)
.
ধীরেন্দ্রনাথ রায় বললেন- বাবা, তোমার নামটা যেন কী ?
- কলিমউল্লাহ ।
- হ্যাঁ, তাই তো । কলিমউল্লাহ । এখন পরিষ্কার মনে পড়েছে । তুমি কি খাওয়াদাওয়া করেছ ?
- জি না স্যার ।
- এসো আমার সঙ্গে চারটা ভাত খাও । আয়োজন খুব সামান্য । ভাত, ডিম ভর্তা । ঘরে আরো ডিম আছে । তোমাকে ডিম ভেজে দেব। ঘরে এক কৌটা ভালো গাওয়া ঘি ছিল, কৌটাটা খুঁজে পাচ্ছি না..
.
কলিমউল্লাহ বলল- এখন খেতে পারব না । আপনার কাছে আমি একটা অতি জরুরী কাজে এসেছি ।
- জরুরী কাজটা কী ?
- মিলিটারির এক কর্নেল আপনার সাথে কথা বলতে চান ।
ধীরেন্দ্রনাথ রায় বিস্মিত হয়ে বললেন- আমার সাথে মিলিটারির কী কথা ?
- আমি জানি না । তবে স্যার আপনার ভয়ের কিছু নেই । আমি সঙ্গে আছি ।
.
ধীরেন্দ্রনাথ রায় বললেন- তুমি আমার কোন ব্যাচের ছাত্র বলো তো ?
- কথা বলে সময় নষ্ট করতে পারব না । মিটিংটা শেষ করে আসি, তারপর গল্প করব ।
- দুইটা মিনিট অপেক্ষা করো, ভাতটা খেয়ে নিই । আমি খুব ক্ষুধার্ত । সকালে নাশতা করিনি।
- ভাত খাবার জন্যে অপেক্ষা করার সময় নাই স্যার।
- তাহলে দাঁড়াও, পাঞ্জাবিটা গায়ে দিয়ে আসি । আমার সঙ্গে কি কথা বুঝলাম না । সে আমার ছাত্র না তো? করাচি ইউনাভার্সিটিতে আমি দু'বছর মাষ্টারি করেছি । প্রফেসর সালাম সাহেব সেখানে আমার কলিগ ছিলেন ।
কলিমউল্লাহ বলল- আপনার ছাত্র হবার সম্ভাবনা আছে । কর্নেল সাহেব যেভাবে বললেন "স্যারকে একটু নিয়ে আসো"... তাতে মনে হচ্ছে উনি আপনার ছাত্র ।
.
ধীরেন্দ্রনাথ রায় চৌধুরী গাড়িতে উঠে দেখলেন.. গাড়ি ভর্তি মানুষ । তারা সবাই চিন্তায় অস্থির । ধীরেন্দ্রনাথ রায় তাদের দিকে তাকিয়ে আন্তরিক ভঙ্গিতে হাসলেন । ভুলে তিনি চশমা ফেলে এসেছেন বলে তাদের কাউকে চিনতে পারলেন না । চোখে চশমা থাকলে এদের অনেককেই তিনি চিনতেন । বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানরা সেই গাড়িতে বসেছিলেন । তাঁদের নিয়ে যাওয়া হবে বধ্যভূমিতে....
(জোছনা ও জননীর গল্প : হুমায়ূন আহমেদ)






বুধবার, ২১ আগস্ট, ২০২৪

শোনো মহাজন, আমি নয় তো এক জন

Song by Shunno

Album: Bhaago

আমার চোখে তুমি দেখো, আমি তো দেখি না
আমার কাঁধে দখল নিয়েও শান্তি হলো না
আমার হাতে তুমি ভাঙ্গো গড়েছিলাম যা
আমার কথাই তুমি বলো, কেমনে হলো তা?
আমার বিচার তুমি করো, তোমার বিচার করবে কে?
কবে তোমার দখল থেকে মুক্তি আমায় দেবে?
শোনো মহাজন, আমি নয় তো এক জন
শোনো মহাজন, আমরা অনেক জন
শোনো মহাজন, আমি নয় তো একজন
শোনো মহাজন, আমরা অনেক জন
তোমার খেলা দেখি বলে দেখবো কি আজীবন?
আমার খেলা শুরু হলে রুখবে না কেউ তখন
অনেক হলো বানর নাচন, এবার একটু শান্ত হও
কীসের আমার ভালো-মন্দ আমাকেই বুঝতে দাও
আমার বিচার তুমি করো, তোমার বিচার করবে কে?
কবে তোমার দখল থেকে মুক্তি আমায় দেবে?
শোনো মহাজন, আমি নয় তো এক জন
শোনো মহাজন, আমরা অনেক জন
শোনো মহাজন, আমি নয় তো একজন
শোনো মহাজন, আমরা অনেক জন

 

Shono Mohajon

রাজার রাজ্যে সবাই গোলাম

Artist: Tasrif Khan

 
রাজার রাজ্যে সবাই গোলাম
করতে হবে রাজার সুনাম
নাহয় তোমার কল্লা যাবে
বিরাট কঠিন শাস্তি পাবে
এ কেমন রাজ্য বলো
কে খারাপ, কে বা ভালো
ভালো মানুষ অন্ধকারে
অমানুষই আলোর দ্বারে
এ কেমন হচ্ছে খেলা
চারিদিকে কষ্ট মেলা
কে কোথায় যাচ্ছি ভেসে
থামবো কোথায় অবশেষে
রাজার রাজ্যে সবাই গোলাম
করতে হবে রাজার সুনাম
নাহয় তোমার কল্লা যাবে
বিরাট কঠিন শাস্তি পাবে
তুমি ভালো ভাবে বাঁচতে চাবে
তবে তোমার শাস্তি হবে
ভাবছো তুমি বিচার চাবে?
এবার বোকা সব হারাবে
বললে কথা আস্তে বলো
কিংবা রাজার কথায় চলো
এদিক-সেদিক পা বাড়ালে
তবেও তুমি সব হারালে
এ কেমন রাজ্য বলো
কে খারাপ, কে বা ভালো
ভালো মানুষ অন্ধকারে
অমানুষই আলোর দ্বারে
এ কেমন হচ্ছে খেলা
চারিদিকে কষ্ট মেলা
কে কোথায় যাচ্ছি ভেসে
থামবো কোথায় অবশেষে
রাজার রাজ্যে সবাই গোলাম
করতে হবে রাজার সুনাম
নাহয় তোমার কল্লা যাবে
বিরাট কঠিন শাস্তি পাবে
ভাবছো কোথায়, কে সে রাজা?
আমরাই রাজা, দিচ্ছি সাজা
Office, ব্যবসা, সমাজ চালাই
মানুষ হয়েও মানুষ জ্বালাই
আমরাই সেই মুখোশ মানুষ
ভালো সেজে উড়াই ফানুষ
কইয়ের তেলে কই-টা ভেজে
পরের ঘাড়ে চাপাচ্ছি দোষ
এ কেমন রাজ্য বলো
কে খারাপ, কে বা ভালো
ভালো মানুষ অন্ধকারে
অমানুষই আলোর দ্বারে
এ কেমন হচ্ছে খেলা
চারিদিকে কষ্ট মেলা
কে কোথায় যাচ্ছি ভেসে
থামবো কোথায় অবশেষে
রাজার রাজ্যে সবাই গোলাম
করতে হবে রাজার সুনাম
নাহয় তোমার কল্লা যাবে
বিরাট কঠিন শাস্তি পাবে
রাজার রাজ্যে সবাই গোলাম
করতে হবে রাজার সুনাম
নাহয় তোমার কল্লা যাবে
বিরাট কঠিন শাস্তি পাবে

Rajar Rajje Shobai Golam

মঙ্গলবার, ২০ আগস্ট, ২০২৪

খোকা

কন্ঠঃ প্রীতম হাসান, ফেরদৌস ওয়াহিদ
কথাঃ প্রীতম হাসান, নুহাশ হুমায়ুন
সুরঃ প্রীতম হাসান



না না না যাবো না না কোত্থাও যাবো না
আমি মরে গেলেও না, শোধ না হলে ঋণ
দামি ফোন আর দামি ঘড়ি সবই তো দিলাম
তবু সময় দিলে না।
কল দাওনা কোনোদিন,
শুধু বলো ফোন দিয়োনা রাতে,
আব্বু পাশে থাকে,
ভাইয়া বারান্দাতে
কথা বলতে পারবো না।
আমার বন্ধু জানে সবই,
কার সাথে খাও কফি ?
বলে দাও সত্যি এতো কি ভয়?

আমার মা বলেছিলো
“খোকা তুই প্রেম করিস না,
ভালো ছেলেদের কপালে ভালো মেয়ে জোটে না”

গোজামিল, গোজামিল
সারাটা জীবন যে পাইলা গোজামিল
তোমার এ সত্যিকারের প্রেমের নামে
দিয়া দিছে বড়ো গোজামিল,
নাও ঠেলা।

জানি জীবনের থেকে ভালোবাসাটা কঠিন,
তাই ভালোবেসে মরেছি তোমার হতে প্রতিদিন।

এখন বলো কি করছো, কেমন আছো ?
নতুন ছেলেটা কি তোমার প্রিয় রং কি জানে?
সুর পারে আমার গানে?
না কি সে কোনো প্রিয় গানের মদতে?
প্রথম প্রথম ভালো লাগে, পরে ফেলে রাখে
আমি ছিলাম যখন সাথে, ফোনটা উল্টো থাকে,
উঁকি মারো মাঝে, আমি কিছু বুঝিনা।

আমার কানে আসে সবই,
কার সাথে খাও কফি ?
বলে দাও সত্যি এতো কি ভয়?

তাই তো মা বলেছিলো
“খোকা তুই প্রেম করিস না,
ভালো ছেলেদের কপালে ভালো মেয়ে জোটে না”
আমার মা বলেছিলো
“খোকা তুই প্রেম করিস না,
ভালো ছেলেদের কপালে ভালো মেয়ে জোটে না”

গোজামিল, গোজামিল
সারাটা জীবন যে পাইলা গোজামিল।
ভালো ছেলেদের কপালে ভালো মেয়ে জোটে না।

বৃহস্পতিবার, ৪ জুলাই, ২০২৪

আবদুল হাই, করে খাই খাই

লুৎফর রহমান রিটন


‘আবদুল হাই, করে খাই খাই,

এক্ষুনি খেয়ে বলে, কিছু খাই নাই।

লাউ খায় শিম খায়,

খেয়ে মাথা চুলকায়,

ধুলো খায়, মুলো খায়,

মুড়ি সবগুলো খায়,

লতা খায় পাতা খায়,

বাছে না সে যা-তা খায়,

থেকে থেকে খাবি খায়,

কত হাবিজাবি খায়,

সেদ্ধ ও ভাজি খায়,

খেয়ে ডিগবাজি খায়,

বকুনি ও গালি খায়,

থামে না সে খালি খায়।

গরু খায় খাসি খায়,

টাটকা ও বাসি খায়,

আম খায়, জাম খায়,

টিভি প্রোগ্রাম খায়।

খোলা মাঠে হাওয়া খায়,

পুলিশের ধাওয়া খায়,

ফুটবল কিক খায়,

রক মিউজিক খায়,

মিষ্টির হাঁড়ি খায়,

জামদানি শাড়ি খায়,

ভাত তরকারি খায়,

টাকা কাঁড়ি কাঁড়ি খায়।

চকোলেট টফি খায়,

শরবত কফি খায়,

ঘটি খায় বাটি খায়,

চিমটি ও চাঁটি খায়।

হাসি খায় খুশি খায়,

ভুসি খায়, ঘুষি খায়,

ট্যাংরা ও তিমি খায়,

কোল্ড্রিংকস মিমি খায়,

বেঞ্চি ও টুল খায়,

বিরিয়ানি ফুল খায়,

স্বর্ণের দুল খায়,

খেয়ে ক্যাপসুল খায়।

গাড়ি খায় বাড়ি খায়,

পুলিশের ফাঁড়ি খায়।

গুঁতো খায়, জুতো খায়,

সুঁই খায় সুতো খায়।

তরতাজা হাতি খায়,

শরীফের ছাতি খায়,

মাঝে মাঝে লাথি খায়।

যা দেখে সে তাই খায়,

অ্যাশট্রে ও ছাই খায়,

খেতে খেতে খেতে খেতে,

পেট হলো ঢোল, তবু তার মুখে সেই,

পুরাতন বোল- কী যে অসুবিধে, খালি পায় খিদে।


ছড়াটি বেশ মজার। ভাবার্থ তাৎপর্যপূর্ণ। আসলেই সমাজে এমন কিছু লোক আগেও ছিল, যাদের ছিল খাই খাই রব।

হিংসুটিদের গান

 - সুকুমার রায়

 


বুধবার, ১৯ জুন, ২০২৪

ছন্দে সুরে সকল জেলার নাম

(জানিনা কে লিখেছেন,লিখার জন্য তাকে ধন্যবাদ)


ছন্দে সুরে বলছি আমি সকল(৬৪)জেলার নাম
তাল মেলাতে সবার আগে আসলো কুড়িগ্রাম।
প্রধান জেলা ঢাকা থেকে একটুখানি দূর
এক জেলার নাম নরসিংদী আর একটা গাজীপুর ।
জয়পুরহাট ও লালমনিরহাট দুইটা জেলার নাম
রাজশাহীর নাম উজ্জ্বল করছে মিষ্টি স্বাদের আম।
পাহাড় ঘেরা বান্দরবান ও সিলেট খাগড়াছড়ি
ময়মনসিংহের কিশোরগঞ্জে এই অধমের বাড়ি ।
নেত্রকোনা সুনামগঞ্জে আছে ধানের মাঠ
সুন্দর বনের কাছে আছে খুলনা বাগেরহাট ।
ভোলা এবং বরিশালে আছি অনেক নদী
পাবনায় আছে পাগলা গারদ বগুড়াতে দধি ।
পাশাপাশি দুইটা জেলা টাঙ্গাইল জামালপুর
আরো দুইটা জেলা হল কুষ্টিয়া যশোর ।
মনের মত একটা জেলা নাম তার মাগুরা
দন্তন্য তে নারায়ণগঞ্জ নাটোর ও নওগাঁ ।
দন্তন্য তে আরো চারটি জেলা বলতে পারি
নবাবগঞ্জ ও নোয়াখালী নড়াইল নীলফামারী ‌।
গঞ্জ দিয়া মানিকগঞ্জ হয় আরো মুন্সিগঞ্জ
গোপালগঞ্জ হয় হবিগঞ্জ হয় আরো সিরাজগঞ্জ ।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও কিন্তু গঞ্জ দিয়া ভাই
এদের ছাড়া বাংলাদেশে আর কোন গঞ্জ নাই ।
রংপুর এবং রাঙ্গামাটির নামটা রঙে রাঙা
নামের জন্য আরও সুন্দর চাঁদপুর চুয়াডাঙ্গা ‌।
কক্সবাজার নামের জেলা আছে সাগর পাড়ে
পঞ্চগড়টা পড়ছে বন্ধু দেশের এক কিনারে ।
ফেনী জেলার নামটা মাত্র দুইটা অক্ষর দিয়া
সবচেয়ে বেশি অক্ষর লাগে লিখতে বি-বাড়িয়া ।
ছয়টা অক্ষর লিখতে লাগে মৌলভীবাজার
এদিক থেকে শরীয়তপুর সমান তাহার ।
শেষের দিকে এসে দেখি বসছে পুরের মেলা
নামের শেষে পুর লাগানো অনেকগুলো জেলা ।
পুর দিয়ে ভাই শেরপুর আছে আছে পিরোজপুর
মেহেরপুর ও মাদারীপুর আরো দিনাজপুর।
ফরিদপুর ও লক্ষিপুর এই দুই টা জেলার সাথে
পুরের পালা শেষ করিয়া গেলাম বরগুনাতে ।
আসার পথে কুমিল্লা ও ঝালকাঠি সহ
ঘুরে এলাম রাজবাড়ী তার সঙ্গে ঝিনাইদহ ‌।
গাইবান্ধার নাম বাদে থাকে আর মাত্র এক হালি
তাদের মধ্যে একটা জেলার নাম পটুয়াখালী ।
এখন শুধু বাকি আছে তিনটা জেলার নাম
এদের মধ্যে একটা জায়গা হইল চট্টগ্রাম ‌।
সাতক্ষীরায় আর ঠাকুরগাঁয়ে হইল এই গান শেষ
এদের নিয়েই গড়া আমার সোনার বাংলাদেশ ।